হাতে সময় মাত্র কয়েকদিন। তারপরেই WB SET পরীক্ষা। মনে মনে সকলেরই একটা ভীতি কাজ করছে। নিজের প্রস্তুতি কতখানি ঠিক মতো হয়েছে তাই নিয়েই সর্বক্ষণ মাথায় মধ্যে দুশ্চিন্তা হয়ে চলেছে। সেই কারণেই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে BSSEI নিয়ে আসতে চলেছে ম্যারাথন মক টেস্ট। সেই সম্পর্কেই জেনে নিন বিস্তারিত এই আর্টিকেলে।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা WB SET। West Bengal State Eligibility Test হল রাজ্যস্তরের যোগ্যতা নির্ধারণের একটি পরীক্ষা। এর দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর বা লেকচারশিপের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী নির্বাচন করা হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের কলেজে শিক্ষাদান করার জন্য পরীক্ষার্থীদের রাজ্যস্তরে স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট বা সেট পরীক্ষায় বসতে হয়। WBCSC বা পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের এই পরীক্ষা আয়োজিত হয়ে থাকে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যস্তরের যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষা ( সহকারী অধ্যাপক পদের জন্য) বা WB SET, এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসাবে বিবেচিত হয়। এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত প্রার্থীরা নিশ্চিতভাবে জ্ঞাত যে আলোচ্য পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনের পরে, তারা সহকারী অধ্যাপক হওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, আলোচ্য পরীক্ষাটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) দ্বারা নির্ধারিত নিয়মাবলি অনুসরণ করে থাকে। তাই কেউ যদি UGC NET এর পাশাপাশি WB SET পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিতে থাকেন, তাহলে তারা দুটির মধ্যেই অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পাবেন।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন (WBCSC) পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য WB SET পরীক্ষা পরিচালনা করে।
বর্তমান বছরে অর্থাৎ ২০২৪ সালে ২৬ তম WB SET পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ১৫ ডিসেম্বর। গতমাসের ২০ নভেম্বর ২০২৪-এ এই পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। অপেক্ষা শুধুমাত্র পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রশ্নপত্র পাওয়ার । তাই জন্য আশা করা যায় সকলেরই প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। কিন্তু প্রস্তুতি কতখানি জোরদার হয়েছে তা যাচাই করতে প্রয়োজন মক টেস্ট দেওয়া।
১) পরীক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ
মক টেস্টের সময় প্রকৃত পরীক্ষার পরিবেশ তৈরি করা হয়ে থাকে। বাড়িতে বসে বই পড়ে নিজে নিজে অভ্যাস করা আর মক টেস্ট দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বাড়িতে নিজে পড়ার সময় নির্দিষ্ট কোনো সময়ানুবর্তিতা থাকে না। আর তাই জন্য সব বিষয় সঠিক ভাবে আয়ত্ত করা যায় না। কিন্তু মক টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ধরন ও পরিবেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়া যায়। একটি মক টেস্ট তাই প্রকৃত পরীক্ষার উদ্বেগ এবং চাপ কমাতে পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করে।
২) পরীক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হওয়া
যে কোনো বড়ো পরীক্ষার মক টেস্টগুলি একেবারে প্রকৃত পরীক্ষার অনুরূপে প্রস্তুত করা হয়। এই মক টেস্ট এখন অনলাইন কিংবা অফলাইনে যেখানেই বা যে মাধ্যমেই অনুষ্ঠিত হোক না কেন তাতে সম্পূর্ণ সিলেবাস ও পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ হয়। এই মক টেস্ট দেওয়ার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা নিজেদের সুবিধা অসুবিধাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারে।
৩) গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন
নিয়মিত মক টেস্টে অংশগ্রহণ করলে কোন কোন প্রশ্ন কতটা বেশি অধ্যয়ন করা ভালো, কোন কোন অংশ জরুরি, কোন অঞ্চল থেকেই বা বেশি নম্বর ওঠে সেই সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা লাভ হয়। এই দ্বারা বারবার পাঠ অভ্যাস করার সুযোগ থাকে। এমন অনেক প্রশ্ন সাজেশনের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়, যা প্রকৃত পরীক্ষার সঙ্গে ৯০% মিল পাওয়া যায়। এর ফলে পরীক্ষায় যদি অনুরূপ প্রশ্নও থাকে, তা খুব সহজে সমাধান করা যায়।
৪) দুর্বলতা দূরীকরণ
মক টেস্ট কোন বিভাগের জন্য কত বেশি অধ্যয়ন করতে হবে স্থির করে, সেটি বুঝতে সাহায্য করে। যখন বেশ কয়েকটি মক টেস্ট দেওয়ায় হয়ে যায়, তখন পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই বুঝতে পারে কোন বিভাগগুলি ভালোভাবে তৈরি হয়েছে এবং কোন অংশ আরও ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। আর কোন বিভাগগুলিতে কতখানি দুর্বলতা রয়ে গিয়েছে। এই মক টেস্ট সব টি বিভাগ সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করে। একবার যদি কোন বিষয়ে, কতটা এবং কেন দুর্বলতা রয়েছে সেই ধারণাটি হয়ে যায় তাহলেই খুব সহজে দুর্বলতা কাটিয়ে সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
৫) সময়ের সঠিক ব্যবহার
পরীক্ষার স্থানে উপস্থিত হওয়ার সময় পরীক্ষার্থীদের মানসিক চাপে সময়ে কাজ করার গতি কমে যায়। সেক্ষেত্রে ভুল ভ্রান্তি সম্ভবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই মক টেস্ট দেওয়া এই সকল সমস্যাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে অনেকাংশেই সাহায্য করে। এটি পরীক্ষার্থী মধ্যে সময় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং তার সঠিক ব্যবহার করতে শেখায়। একটি নির্দিষ্ট ধরনের প্রশ্ন ঠিক সম্পূর্ণ করতে কতটা সময়ে দরকার, সেই কৌশল আয়ত্ত করতে সাহায্য করে।
৬) প্রশ্ন উত্তর পর্যালোচনা
মক টেস্টের মাধ্যমে দক্ষতার বিশ্লেষণের জন্য প্রকৃত অন্তর্দৃষ্টির প্রয়োজন হয়। আগে বুঝতে হবে কোন প্রশ্নের উত্তর কতটা সময়ের মধ্যে দিতে হবে। প্রশ্নগুলির উত্তর কতটা তাড়াতাড়ি দিলে পরীক্ষাটি সম্পন্ন করতে পারবে সেসব কিছুই শেখায়।
৭) ভীতি দূরীকরণ
এটি একেবারে প্রমাণিত সত্য যে, অনেক পরীক্ষার্থীই পরীক্ষার আগে ভীত হয়ে পড়ে। এটি হওয়ার মূল কারণ হল অনুশীলন ও আত্মবিশ্বাসের অভাব। কিন্তু নিয়মিত মক টেস্টে অংশ নিলে এই ভীতিভাব দূর হয়ে যায়। এটি পরীক্ষার জন্য কৌশলগত পদ্ধতির বিকাশ করতে সাহায্য করে।
৮) অগ্রগতির মাত্রা অনুধাবন
মক টেস্টগুলি পরীক্ষার্থীকে দক্ষতার সঙ্গেও সঙ্গে সহজে অগ্রগতির মাত্রা অনুধাবন করে থাকে। মক টেস্ট নেওয়ার মাধ্যমে পরীক্ষার কৌশলগুলি জেনে নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও সেই অনুযায়ী অধ্যয়ন করতে পারা যায়। অনেক সময় দেখা যায় অগ্রগতির কথা ভাবতে গিয়ে কনফিডেন্স এমন বেড়ে বা কমে যায় যে, নিজের ঠিক ভুলের বিচার করতে গিয়ে সঠিক অগ্রগতির মাত্রা হ্রাস পায়। যদি একটি মক টেস্টে একজন পরীক্ষার্থী ব্যর্থ হয়, তাহলে সে নিজের অগ্রগতির পথে দুর্বলতাগুলিকে অনুসন্ধান করতে পারবে এবং পরবর্তীতে নিজের প্রস্তুতির সঠিক কৌশল আয়ত্ত করার চেষ্টা করবে।
৯) ধারণা গঠন
পরীক্ষার্থী তার পেপার ২-এর বিষয়টি কতটা ভালোভাবে বুঝতে পারছে, সেটা জানা বা বোঝা যায় কত সহজে সে প্রশ্নগুলি সমাধান করছে। সেই জন্যই বলা যায় নিজের প্রস্তুতির সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে নিয়মিত মক টেস্টে উপস্থিত হওয়ার জরুরি এবং অনেক বেশি উপকারীও বটে।
১০) আত্মবিশ্বাস গঠন
নিয়মিত মক টেস্ট দিলে পরীক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পরীক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার আগের মুহূর্তে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ঠিক রাখতে পারে না। যার ফলে তারা পিছিয়ে পড়ে। পরীক্ষার্থীরা মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তায় জর্জরিত হলে পরীক্ষায় বিরূপ ফল লাভ করে। আবার এটাও দেখা যায় যে, বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীরা কম নম্বর পেয়ে র্যাঙ্ক হারানোর ভয়ে অবসাদে চলে যায়। বহুক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকের রক্তচাপও বৃদ্ধি পায়। আত্মবিশ্বাস হারালে একাগ্রতা ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে শুরু করে। ফলে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে সব ভুলে যায় অথবা অসুস্থ হয়ে যায়। মক টেস্ট পরীক্ষা দেওয়ার ফলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বেড়ে যায়। যার ফলে প্রকৃত পরীক্ষায় তাদের আত্মবিশ্বাস থাকে সর্বোত্তম।
শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীন উন্নতির কথা মাথায় রেখে BSSEI আয়োজন করেছে একটি অনলাইন ম্যারাথন মক টেস্টের। যেটি অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরের ১১, ১২,১৩ তারিখে। পরীক্ষার আগে এই মক টেস্ট পরীক্ষার্থীদের ভীতি কাটাতে সহায়তা করবে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকাংশে বৃদ্ধি করবে। তাই নিজের প্রস্তুতিকে যাচাই করতে পরীক্ষার ঠিক আগে অবশ্যই মক টেস্ট দেওয়া উচিত। নিজের প্রস্তুতিকে সুদৃঢ় করে তোলো এবং লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়ে চলো মাথা উচু করে।
OMR Sheet ডাউনলোড করুন – Download Now
WB SET Updates - Whatsapp Group | |
General Paper | প্রথম গ্রুপে যুক্ত হতে না পারলে দ্বিতীয় গ্রুপে যুক্ত হবেন |
Sanskrit | |
Bengali | |
English | |
Education | |
History | |
Geography | |
Philosophy | |
Political Science |
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা Competitive Exam আজকাল আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ...
বছরের শুরুতেই একগুচ্ছ খুশির খবর উপহার দিচ্ছে সরকার। চাকরি প্রার্থীদের...
WBPSC Clerkship 2024-25-এর ছোটো নোটিফিকেশন প্রকাশিত হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক...
পশ্চিমবঙ্গ সরকার বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা নিয়ে থাকে।...
RRB Group D লেভেল ১ পরীক্ষা ভারতীয় রেলওয়ে রিক্রুট্মেন্ট বোর্ড...