বর্তমান যুগে দাঁড়িয়েও শিক্ষকতা একটি সম্মানীয় পেশা। নিজেদের শিক্ষকদের দেখে অনেকেরই মনে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দানা বাঁধতে শুরু করে। ভাবতে থাকে কেমন করে ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে সেও একদিন শিক্ষাদান করবে তার শিক্ষার্থীদের। সমাজের একটি স্তম্ভ বলা যায় এই পদটিকে। সকল পেশার ভবিষ্যৎ কান্ডারিদের নিজেদের হাতে গড়ে পিঠে তোলেন কিন্তু এই শিক্ষকরাই।
কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে শিক্ষকতার ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্নই বলা যায়। কারণ গত ৮ বছর ধরে কোনো সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। ফলত রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, শিক্ষার্থী রয়েছে অথচ তাদের শিক্ষাদানের জন্য কোনো শিক্ষক নেই। একরাশ আশা বুকে করে তবুও পদপ্রার্থীরা অপেক্ষা করে গেছে বছরের পর বছর ধরে।
WBSSC SLST শেষবারের মতো সংগঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। তারপর ২০১৬-২০২৪ সাল পর্যন্ত মানে প্রায় ৮-৯ বছর হয়ে গেল WBSSC পরীক্ষার দ্বারা কোনো নিয়োগ হয়নি। অর্থাৎ যাদের আশা ছিল WBSSC SLST পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষক রূপে নিজেদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন গড়ে তুলবেন তাদের জীবন থেকেও চলে গেছে ৮-৯ বছর। যদিও প্রতিবছর পুজোর আগে পরিচালনা সংস্থার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, WBSSC পরীক্ষার দ্বারা খুব শীঘ্রই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে, কিন্তু সময় চলে, বিজ্ঞপ্তি আর বাস্তবায়িত হয় না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে যায় সকল ঘোষণা। কেটে যেতে থাকে একটি করে বছর।
বেশ কিছুদিন আগে অসাধু উপায় অবলম্বন করে কিছু শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু কালের নিয়মে বেশ কিছুদিন পরে হলেও অসাধু উপায় অবলম্বন করা প্রার্থীদের নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়।
২০২২ সালে ৫ মে WBSSC SLST-এর জন্য অফিসিয়াল নোটিফিকেশন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখও করা হয়েছিল কিছুদিনের মধ্যেই সহকারী শিক্ষক পদে পুনরায় নিয়োগ শুরু হবে। কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্র একটি বিজ্ঞপ্তি আকারেই রয়ে গেছে, কালের অতল গর্ভেই রয়ে গেছে সেই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ।
পূর্বেই উল্লিখিত ২০২২ সালের পর স্কুল সার্ভিস কমিশন আর কোনো রকম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। বি.এড কলেজগুলিতে যখন ভর্তির প্রক্রিয়া চলে তখন প্রতি বছর ঘোষণা করা হয়, কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষক নিয়োগ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু সেই ঘোষণা শুধুমাত্র হয়েই থেকে যায়, বাস্তবায়িত হয়না।
কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন মাসের পর মাস। নিয়োগের বিষয়ে কিছুই জানায় না সরকার। যোগ্য শিক্ষকেরা গ্রীষ্মের দাবদাহ, বর্ষার প্রবল বৃষ্টি, শীতের শৈত্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে রাস্তায় বসে রয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থার এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ে ৩১/১২/২০২৪ তারিখে WBPSC Assistant Mistress Master নিয়োগের জন্য একটি ইন্ডিকেটিভ নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে। তার কয়েকদিনের মধ্যে ৫/১/২৫ তারিখে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে, যেখান থেকে জানা যাচ্ছে সরকার পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেকটি ক্লাসে শ্রেণিভিত্তিক পড়ুয়ার সংখ্যা ঠিক কত? বর্তমানে কোন স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর সংখ্যাই বা কত রয়েছে? কোন স্কুলে ঠিক কতখানি শূন্যপদ পড়ে রয়েছে? সমস্ত বিষয়েই বিশদ রিপোর্ট জানতে চেয়েছে শিক্ষা দফতর।
যেহেতু ২৬০০০ শিক্ষক সংক্রান্ত কোর্ট কেসটিও শেষ হতে চলেছে এবং ২০২৬ সালে যেহেতু নির্বাচন রয়েছে তাই সম্ভবত ক্ষীণ আশার প্রদীপের আলো দেখতে পাচ্ছে রাজ্যের যোগ্য শিক্ষকতার পদপ্রার্থীরা। সত্যিই কি এবার সরকার WBSSC SLST-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তৎপর হচ্ছে, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি কি আবারও পূর্বের হাল ফিরে পাবে? নিশ্চিত অর্থে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না যতদিন না অফিসিয়াল কোনো নোটিফিকেশন আসে।
১) এক একটি অধ্যয়নের স্থানকে বুঝে নেওয়া: সিলেবাসের দ্বারা এক একটি অধ্যয়নের স্থান অর্থাৎ প্রতিটি অংশ সম্পর্কে খুব ভালোভাবে বুঝে নেওয়া যায়। এইভাবে পুরো সিলেবাসের মাধ্যমে অতি সুন্দরভাবে অধ্যয়নের অংশ সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি করা যায়।
২) একটি বাস্তবসম্মত সময়সূচী তৈরি করতে সাহায্য করা: বিষয়ভিত্তিক দৈনিক অধ্যয়নের জন্য সিলেবাসটিকে জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। উদ্বেগজনক অংশগুলিকে কতখানি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সেই সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায় সিলেবাসকে ভালো বোঝা দরকার। পাঠ্যসূচীকে কতটা সময়সূচীতে বাঁধতে হবে সেই বিষয়েও সাহায্য করে।
৩) একটি যুক্তিসঙ্গত লক্ষ্য নির্ধারণ: একই সময়ে অনেকগুলি অংশ নিয়ে নিজের অতিরিক্ত চাপ মনে হয়। এটির জন্য দরকার সিলেবাস ও পরীক্ষার প্যাটার্ন সম্পর্কে সঠিক ধারণা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির আগে পড়ার জন্য সুনির্দিষ্ট এবং পয়েন্ট টু দ্যা রিভিশন নোট প্রস্তুত করা দরকার তার জন্য সিলেবাসকে জানতে হবে। তবে পরীক্ষার একদম আগে নতুন বিষয় অধ্যয়ন করা বা ক্র্যামিং করা ভাল নয়।
৪) বিষয়গুলির মধ্যে স্থানান্তর: পরীক্ষার অধ্যয়নকে স্মৃতি-ভিত্তিক, সমস্যা সমাধান, ব্যাখ্যা বেস বিষয় হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা দরকার। এই জন্যই সিলেবাসকে বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৫) স্মরণ এবং সংক্ষিপ্তকরণে সিলেবাস : একমাত্র সিলেবাসকে পর্যায়ক্রমে জানলে স্ব প্রস্তুতি এবং পুরনো পড়া স্মরণ করা সবকিছুই সঠিকভাবে হয়। স্ব-মূল্যায়নের জন্য আপনি যা অধ্যয়ন করেছেন তার জন্য সিলেবাসকে স্মৃতিতে রাখা জরুরি।
৬) পুরানো প্রশ্নপত্র ব্যবহার করুন: পরীক্ষার অতীতের প্রশ্নপত্র দেখেও খুব সহজে সিলেবাসকে সুন্দরভাবে জানা যায়। এটি জ্ঞানের ভিত্তি এবং প্রস্তুতির উপর নিজেকে পরীক্ষা করতেও সহায়তা করে।
পরীক্ষা হয়তো হবেই কোনো না কোনোদিন কিন্তু নোটিফিকেশন বেরলে তার প্রস্তুতি শুরু করা হবে এই ভাবনা ভেবে বসে থেকে লাভ নেই। নিজের পড়াশোনা শুরু করা প্রয়োজন আজ থেকেই। প্রায় ৮-৯ বছর নিয়োগ না হওয়ার ফলে পদপ্রার্থীদের সংখ্যাটা ঠিক কত লক্ষে গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। সেই কারণে WBSSC SLST Syllabus দেখে নিজের প্রস্তুতি নিজেকেই আগে থেকে সেরে রাখতে হবে। যদি পরীক্ষা হয় তাহলে যেন তুমিও লক্ষ্যভেদ করতে পারো। এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রইল কিছু টিপস-
১) WBSSC SLST Syllabus-কে ভালোভাবে বুঝতে হবে।
২) প্রতিদিন খানিকটা নির্দিষ্ট সময় দিতে হবে পড়াশোনার জন্য।
৩) বিষয়ের বিভিন্ন অংশ ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত নোট বানিয়ে পড়তে হবে।
৪) নিজের অগ্রগতির ওপর নিয়মিত ট্র্যাক রাখতে হবে।
৫) চেষ্টা করতে হবে প্রতিদিন মক টেস্ট দিতে।
৬) প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে অবগত হতে হবে।
৭) সব সময় নিজেকে পজিটিভ রাখতে হবে।
নীচে WBSSC SLST Syllabus PDF আপলোড করা হল। ডাউনলোড করে আজ থেকেই শুরু করে দিন নিজের প্রস্তুতি। লক্ষ্যে সফল হওয়ার জন্য আজ থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করুন।
বছরের শুরুতেই একগুচ্ছ খুশির খবর উপহার দিচ্ছে সরকার। চাকরি প্রার্থীদের...
WBPSC Clerkship 2024-25-এর ছোটো নোটিফিকেশন প্রকাশিত হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক...
পশ্চিমবঙ্গ সরকার বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা নিয়ে থাকে।...
RRB Group D লেভেল ১ পরীক্ষা ভারতীয় রেলওয়ে রিক্রুট্মেন্ট বোর্ড...